আসুন বিভিন্ন মসজিদ সম্পর্কে জেনে নেই-পর্ব-৩ বাঘা মসজিদ
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম । সবাই কেমন আছেন । আমি আল্লাহর রহমতে ভাল আছি । আজকে আমি আপনাদের সবাইকে আমাদের বাংলাদেশের সহ বিভিন্ন দেশের কিছ...
http://total-sw.blogspot.com/2013/03/blog-post_8447.html
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। সবাই কেমন আছেন। আমি আল্লাহর রহমতে ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের সবাইকে আমাদের বাংলাদেশের সহ বিভিন্ন
দেশের কিছু মসজিদের তথ্য পেয়েছি বাংলাদেশ প্রতিদিন থেকে। এতে আমার কোন কেরামতি নেই। আমার কাছে ভাল লাগলো ভাবলাম সবাই তো বাংলাদেশে প্রতিদিন পরে না তাই তাদের জন্য
রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় অবস্থিত টেরাকোটা শিল্পমণ্ডিত বাঘা মসজিদ দেশের এক
ব্যতিক্রমী প্রত্নসম্পদ। এ ঐতিহাসিক মসজিদটি রাজশাহী শহর থেকে ৪৫ কি.মি.
দূরে বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত। সুলতান নাসিরউদ্দীন নরসত শাহ
৯৩০ হিজরি (১৫২৩ সাল) মসজিদটি নির্মাণ করেন। ২৫৬ বিঘা জমির সীমানা নিয়ে
মসজিদটি অবস্থিত। সমতল ভূমি থেকে ৮-১০ ফুট উঁচু করে মসজিদের আঙিনা তৈরি
হয়েছে। এর দুই পাশ দিয়ে দুটি ফটক রয়েছে। বর্তমানে উত্তর পাশের ফটকের
ওপরের স্তম্ভ ও কারুকাজ ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়েছে। মসজিদটিতে ১০টি গম্বুজ ও ৪টি
মিনার (যার শীর্ষদেশ গম্বুজাকৃতির) রয়েছে। আর ভেতরে রয়েছে ৬টি স্তম্ভ।
মসজিদটিতে ৪টি মেহরাব রয়েছে যা অত্যন্ত কারুকার্য খচিত। দৈর্ঘ্য ৭৫ ফুট
প্রস্থ ৪২ ফুট, উচ্চতা ২৪ ফুট ৬ ইঞ্চি। দেয়াল চওড়া ৮ ফুট গম্বুজের ব্যাস
৪২ ফুট, উচ্চতা ১২ ফুট। চৌচালা গম্বুজের ব্যাস ২০ ফুট উচ্চতা প্রায় ৩০
ফুট। মাঝখানের দরজার ওপর ফারসি ভাষায় লেখা একটি শিলালিপি রয়েছে। মসজিদটির
গাঁথুনি চুন-সুরকি দিয়ে। ভেতরে এবং বাইরের দেয়ালে মেহরাব ও স্তম্ভ
রয়েছে। পোড়ামাটির অসংখ্য কারুকাজ যার ভেতরে রয়েছে আমগাছসহ গাছ, শাপলা
ফুল, লতাপাতাসহ পার্সিয়ান খোদাই শিল্পে ব্যবহৃত হাজার রকম কারুকাজ। মসজিদ
প্রাঙ্গণের উত্তর পাশেই রয়েছে হজরত শাহদৌলা ও তার পাঁচ সঙ্গীর মাজার।
বাংলার স্বাধীন সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহর পুত্র নাসিরউদ্দীন নসরত শাহ
জনকল্যাণার্থে মসজিদের সামনেই একটি দিঘি খনন করেন। শাহী মসজিদ সংলগ্ন এ
দিঘিটি ৫২ বিঘা জমির ওপর রয়েছে। দিঘির চারপাশে রয়েছে সারিবদ্ধ নারিকেল
গাছ। শীত মৌসুমে এ দিঘিতে অসংখ্য অতিথি পাখির কলতানে এলাকা মুখরিত হয়ে
ওঠে। বর্তমানে দিঘিটির চারটি বাঁধানো পাড় নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া এ
মসজিদ সংলগ্ন জহর খাকী পীরের মাজার রয়েছে। কথিত আছে ১৪ তোলা বিষ খেয়েও
জীবিত ছিলেন হজরত জহর শাহ (রা.)। মূল মাজারের উত্তর পাশে রয়েছে তার কবর। এ
ছাড়া মসজিদ সংলগ্ন মাটির নিচ থেকে মহল পুকুর আবিষ্কৃত হয়। ১৯৯৭ সালে
মাজারের পশ্চিম পাশে খনন কাজের ফলে ৩০ ফুট বাই ২০ ফুট আয়তনের একটি বাঁধানো
মহল পুকুরের সন্ধান মেলেছে। এই পুকুরটি একটি সুড়ঙ্গপথ দিয়ে অন্দরমহলের
সঙ্গে যুক্ত ছিল। তিন দিক থেকে বাঁধানো সিঁড়ির ভেতরে নেমে গেছে। মসজিদের
ভেতরে ও বাইরে রয়েছে প্রচুর পোড়ামাটির ফলক। মসজিদের ভেতরে উত্তর-পশ্চিম
কোণে একটু উঁচুতে নির্মিত একটি বিশেষ নামাজের কক্ষ আছে। এ মসজিদ সংলগ্ন
এলাকায় প্রতিবছর ঈদুল ফিতরের দিন থেকে ৩ দিন পর্যন্ত 'বাঘার মেলা'র আয়োজন
করা হয়। এ মেলাটি ৫০০ বছরের ঐতিহ্য। কালের স্রোতে মসজিদের সৌন্দর্য
অনেকটা মলিন হয়ে গেলেও এর কারুকার্যময় নির্মাণশৈলী এখনো ভ্রমণপিপাসু মনকে
ছুঁয়ে যাবে এ কথা নিঃসন্দেহে বলা যায়।
আপনার মন্তব্য ও চাওয়া-পাওয়া লিখুন অথবা পোষ্টের নাম উল্লেখ করে ই-মেইল করুন-
kabbokatha08@gmail.com